BCS Written Preparation (Bangla) (বাংলা বানান রীতি)
যারা বিসিএস পরীক্ষা/ সরকারী চাকুরীর পরীক্ষা দিবেন তাদের জন্য, এবং যারা চাকুরির ক্ষেত্রেও নানা সময়ে বাংলা ভাষায় চিঠি, পত্র লিখে থাকেন তাদের জন্য বাংলা ভাষার বানান জানা আসলেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। পরীক্ষায় বানান ভুল হলে হয়ত মার্ক কাটা যেতে পারে কিন্তু চাকুরির ক্ষেত্রে এটা খুবি অসম্মানজনক এবং বিব্রতকর পরিস্থিতির তৈরি করতে পারে তাই আজকে আমরা কিছু বানান রীতি ও কিছু শব্দের শুদ্ধ উচ্চারন দেখব।
কিছু বানান রীতিঃ
- যে কোন দেশ/জাতি/ভাষার নাম লিখার ক্ষেত্রে নিশ্চিন্তে ই কার (ি) ব্যবহার করা যাবেঃ দেশঃ গ্রিস, জার্মানি, চিন, ইত্যাদি (ব্যতিক্রমঃ শ্রীলংকা, মালদ্বীপ); ভাষাঃ হিন্দি, পারসি, আরবি; জাতিঃ বাঙালি, পর্তুগিজ, তুর্কি ইত্যাদি ।
- অপ্রাণিবাচক ও ইতরপ্রাণিবাচক অতৎসম শব্দের শেষে ই কার ( ি) হবেঃ বাড়ি, গাড়ি, চাবি, মুরগি,হাতি ইত্যাদি।
- সংস্কৃত বা তৎসম শব্দের শেষে ঈ- কার (ী) হবেঃ জননী,স্ত্রী, নারী ইত্যাদি।
- বিদেশি শব্দের বানানে কখনো ‘ষ’ হবে নাঃ স্টেশন, ফটোস্ট্যাট, স্কোলারশিপ ইত্যাদি।
- সংস্কৃত বা তৎসম কতিপয় শব্দ ছাড়া সব শব্দেই ‘ন’ হবেঃ কর্নেল, বামুন ইত্যাদি।
- বানানে যে বর্ণের উপর রেফ থাকবে সেই বর্ণে দ্বিত্ব হবে নাঃ নির্দ্দিষ্ট হবে না, হবে নির্দিষ্ট; পর্ব্বত হবে না হবে পর্বত ইত্যাদি।
- বিস্ময়সূচক অব্যয় (বাঃ/ছিঃ ইত্যাদি) ছাড়া বাংলা কোনো শব্দের শেষে বিসর্গ (ঃ) রাখা যাবে নাঃ প্রায়শঃ/বিশেষতঃ হবে না, হবে প্রায়শ/ বিশেষত ইত্যাদি।
- কোন শব্দের শেষে যদি ঈ- কার (ী) থাকে, সেই শব্দের সাথে জগৎ, বাচক, বিদ্যা, সভা, ত্ব, তা, নী,ণী পরিষদ, তত্ত্ব ইত্যাদি যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করলে নতুন শব্দে ঈ- কার (ী) এর পরিবর্তে ই-কার (ি) হবেঃ যেমনঃ প্রাণী+জগৎ= প্রাণিজগৎ, প্রাণী+বিদ্যা=প্রাণিবিদ্যা, মন্ত্রী+সভা= মন্ত্রিসভা, কৃতী+ত্ব=কৃতিত্ব, স্থায়ী+ত্ব= স্থায়িত্ব, দায়ী+ত্ব= দায়িত্ব, সঙ্গী +নী= সঙ্গিনী, অধিকারী+ ণী= অধিকারিণী ইত্যাদি।
- শব্দে উর্ধ্বকমা লেখা যাবে নাঃ যেমন হ’ল লেখা যাবে না, হল লিখতে হবে; দু’টি লেখা যাবে না দুটি লিখতে হবে।
- বিদেশী শব্দের ক্ষেত্রে একই নীতিমালায় বাংলা বানান লেখা উচিতঃ যেমনঃ আযান না লিখে আজান লেখা, শহীদ না লিখে শহিদ লেখা, স্পীকার না লিখে স্পিকার লেখা ইত্যাদি।
- অতৎসম ও বিদেশি শব্দে ঈ-কার ঊ-কার সর্বদাই বর্জিত হবে।
- তৎসম শব্দে ণ-ত্ব ও ষ-ত্ব বিধানের শুদ্ধতা রক্ষা করতে হবে।
- -আলি প্রত্যয় যোগে শব্দ গঠিত হলে শব্দে ই-কার হবেঃ যেমন সোনা+আলি=সোনালি হবে, একইভাবে মিতালি, বর্ণালি, হেয়ালি ইত্যাদি।
কিছু শুদ্ধ বানানঃ
- পিপীলিকা
- বুদ্ধিজীবী
- বিদ্রূপ
- প্রাঙ্গণ
- সামর্থ্য
- বিদ্বান
- ত্র্যহস্পর্শ
- শিরশ্ছেদ
- মনোমোহন
- মধুসূদন
- বৃশ্চিক
- ধরণি
- রুগন্
- সূচি
- মনশ্চোরা
- আকাঙ্ক্ষা
- সরস্বতী
- ভাগীরথী
- শারীরিক
- উজ্জ্বল
- পুরস্কার
- আবিস্কার
- অপরিষ্কার
- চক্ষুষ্মান
- অপরাহ্ণ
- মুমূর্ষু
- নিরপরাধ
- অনাথা
- সুকেশা
- নির্দোষ
- উপর্যুক্ত
- অধীন
- সৌন্দর্য
- সাধুতা
- মাহাত্ম্য
- মহত্ত্ব
- সত্তা
- উৎকর্ষ
- দারিদ্র্য/দরিদ্রতা
- মৌন
- দৈন্য
- সখ্য
- কার্পণ্য/কৃপণতা
- পুরোহিত
- অধ্যবসায়
- ইতোমধ্যে
- নিরীক্ষণ
- পুঙ্খানুপুঙ্খ
- মরীচিকা
- লজ্জাকর
- শ্রদ্ধাঞ্জলি
- মনীষী
- পাণিনি
- উচ্ছাস
- সমীচীন
- ক্ষীণজীবী
- নীহারিকা
- ঔজ্জ্বল্য
- ষান্মাসিক
- মুহূর্ত
- শরীরী
- ম্রিয়মাণ
- সান্ত্বনা
- জ্যৈষ্ঠ
- জৈষ্ঠ্য
- ঔপন্যাসিক
- ঐকতান
- ইদানীং
- ঔদাসীন্য
- সৌজন্য
- সম্ভবপর
- ভৌগোলিক
- অর্ধাঙ্গী
- নিরিখ
- দ্ব্যর্থ
- নিশীথ
- যক্ষ্মা
- শুশ্রূষা
- সখ্য
- দৌরাত্ম্য
- বাহুল্য
- অগ্লূৎপাত
- অচিন্ত্য
- অধ্যাত্ম
- অনিন্দ্য
- অনূর্ধ্ব
- অন্তঃসত্ত্বা
- অন্তর্জ্বালা
- অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া
- অমর্ত্য
- অলঙঘ্য
- উত্ত্যক্ত
- এতদ্ব্যতীত
- ঔজ্জ্বল্য
- ঔদ্ধত্য
- কাঙ্ক্ষিত
- জাজ্বল্যমান
- তীক্ষ্ণ
- ত্বরণ
- ত্বরান্বিত
- ধ্বন্যাত্মক
- নির্দ্বিধা
- নীরব
- ন্যুজ্ব
- ন্যূন
- প্রত্যূষ
- বিভীষিকা
- বৈচিত্র্য
- ব্যত্যয়
- ব্যবচ্ছেদ
- ব্যবধান
- ব্যুৎপত্তি
- ব্রাহ্মণ
- ভ্রাতৃত্ব
- মহত্ত্ব
- লক্ষ্মণ
- শাশ্বত
- শ্মশান
- সংবর্ধনা
- স্বায়ত্তশাসন
- স্বাতন্ত্র্য
কিছু শব্দের ভুল ব্যবহার আমাদের দেশে প্রচলিত আছেঃ
যেমন এমতাবস্থায় এটি ভুল; কারন এখানে ‘এই মত অবস্থায়’ তিনটি শব্দ আছে। ফলে বাহুল্য দোষ ঘটেছে। শুদ্ধ হবেঃ এই অবস্থায় বা এই মতে
“অত্র বিদ্যালয়” এটি ভুল; অত্র অর্থ এইখানে; উক্ত শব্দের অর্থ দাঁড়ায় “এইখানে বিদ্যালয়”
“শ্রদ্ধাঞ্জলী” এটি ভুল; শ্রদ্ধাঞ্জলি হবে।
“উপরোক্ত” এটি ভুল; উপরিউক্ত ও উপর্যুক্ত সঠিক।
“উল্লেখিত” এটি ভুল; উপরে উল্লেখ করা হয়েছে অর্থে উল্লিখিত হবে আর কোথাও বা কখনও উল্লেখ হয়েছে মর্মে উল্লেখকৃত হবে।
“ইতিপূর্বে”, “ইতিমধ্যে” দুটি ভুল; ইতঃপূর্বে ও ইতোমধ্যে হবে।
“এতদ্বারা” ভুল; সঠিক হচ্ছে এতদ্দ্বারা।
“স্বাধীনতাত্তোর” ও “মুক্তিযুদ্ধোত্তর” ১মটা ভুল, ২য় টা ঠিকঃ স্বাধীনতা-উত্তর হবে সঠিক।
“বনজ বৃক্ষ” সঠিক; কারন এর অর্থ “বনে জন্মে যে বৃক্ষ”।
“ফলজ বৃক্ষ” ভুল; কারন এর অর্থ “ফলে জন্মে যে বৃক্ষ!!”, ফল দেয় যে বৃক্ষ বুঝাতে হলে “ফলদ বৃক্ষ”।
“মুহ্যমান” ভুল; সঠিক হচ্ছে মোহ্যমান।
“স্বায়ত্বশাসন” ভুল স্বায়ত্তশাসন সঠিক।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ শব্দ ও দাপ্তরিক কাজে বহুল ব্যবহৃত শব্দসমূহের সঠিক বানান উল্লেখ করা হল। যাতে এগূলোর সটিক ব্যবহার সম্পর্কে আমরা আরো সচেতন হতে পারি।